গবাদি পশু পালন পদ্ধতি ও জাত নির্বাচন | কম খরচে গরু মোটাতাজাকরণ।

আসসালামু আলাইকুম সম্মানিত গৃহপালিত পশুপালন ভাই ও বোনেরা আপনারা যারা গরু পালনে আগ্রহী হয়ে আছে বা গরু পালন করবেন এরকম মন মানসিকতা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন, তাদের জন্য আমার এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই আপনাদের বলব আমার এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই পড়ার অনুরোধ রইলো আমি আর বেশি কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনার দিকে ফিরে যাব।
তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ ঘাস ছাড়া গরু মোটাতাজাকরণ গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা pdf ষাঁড় গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা 100 কেজি দানাদার খাদ্য তালিকা ষাঁড় গরুর খাদ্য তালিকা ওজন অনুযায়ী গরুর খাদ্য তালিকা গরু মোটাতাজাকরণ ঔষধ	 উন্নত জাতের গরুর বীজের নাম কয়েকটি উন্নত জাতের গরুর নাম উন্নত জাতের গরুর ছবি গরুর জাত চেনার উপায় মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাতের নাম গরুর জাত কত প্রকার বিভিন্ন জাতের গরুর নাম ও ছবি দেশি গরুর জাত বাদি পশু পালন প্রশিক্ষণ গবাদি পশু পালন বই pdf গবাদি পশু পালনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা পশু পালনের সুবিধা কি গবাদি পশু পালন ইংরেজি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পালনের গুরুত্ব গবাদিপশু  গবাদি পশু পালন প্রশিক্ষণ বই গবাদি পশু পালন পদ্ধতি গবাদি পশুর সংজ্ঞা গবাদি পশু পালন প্রশিক্ষণ গৃহপালিত পশু কি কি গৃহপালিত পশু পালন

বাংলাদেশে গরুর মাংস খুব জনপ্রিয় এবং চাহিদাও প্রচুর রয়েছে। তাছাড়া মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব কুরবানীর সময় অনেক গরু জবাই করা হয়ে থাকে সুতরাং গরু মোটাতাজ করার পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি লাভজনক ব্যবসা বলা যায়।

গৃহপালিত পশু পালন।

গরু মোটা জাত অরুণ প্রক্রিয়া ধারাবাহিকভাবে যে সকল বিস্ময় গুলো সম্পন্ন করতে হবে তা নিচে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরার চেষ্টা করব।

প্রথম অবস্থায় পশু নির্বাচন করতে হবে।

দ্বিতীয়তঃ কৃমি মুক্তকরণ ও ঠিকাদান কর্মসূচি পালন করতে হবে।
তৃতীয় পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং বাজারজাতকরণ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা থাকতে হবে।

পশুর জাত নির্বাচন বা মোটাতাজাকরণ কর্মসূচিঃ

গরুর জাত নির্বাচন প্রসঙ্গে মোটা করুন কর্মসূচির জন্য গরু ক্রয়ের সময় প্রধান দুটি বিভক্ত বিষয় হলো বয়স ও শারীরিক গঠন।

গরুর বয়স নির্ধারণ করাঃ

গরু মোটাতকরণ করার জন্য সাধারণত দুই থেকে পাঁচ বছরের করু ক্রয় করা যেতে পারে তবে তিন বছরের গরু হলে ভালো হয়।

আরো পড়ুন,

গরুর শারীরিক গঠন মোটা যোগ করনের ব্যবহৃত গরুর দৈহিক গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এইজন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মনে রেখে করুন নির্বাচন করা জরুরি।

দেহ হতে হবে বর্গাকার।

গায়ের চামড়া হতে হবে ঢিলা অর্থাৎ দুই আঙ্গুল দিয়ে ধরে টান দিয়ে দেখতে হবে।
শরীরের হাড় গুলো আনুপাতিক হারে মোটা মাথাটা চওড়া, ঘাড় চওড়া এবং খাটো।
পা গুলো খাটো এবং সোজাসুজি ভাবে শরীরে সাথে যুক্ত এমন পশু নির্বাচন করতে হবে।
প্রচুর পিছনে অংশ ও পিক চওড়া এবং লোম খাটো ও মিলানো থাকতে হবে।

কৃমি মুক্তকরণ কর্মসূচিঃ

প্রচুর কৃমি মুক্তকরণ কর্মসূচির জন্য পোস্ট ডাক্তারের নির্দেশনা মতো কৃমির ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। গরু সংগ্রহের পর পরে পালের সব গরুকে একসাথে কৃমি মুক্ত করা উচিত। তবে প্রতি ৭৫ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য একটি করে ইনডেক্স বা অ্যান্টি ওয়ার্ম ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে এটি পশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

টিকা প্রদান কর্মসূচিঃ

গরুর ক্রয় এর পূর্ব থেকে টিকা না দেওয়া থাকলে খামারে আনার পরপরই সবগুলো গরুকে তরকা বাদলা এবং ক্ষুরা রোগের টিকা প্রদান করতে হবে। এ ব্যাপারে নিকটস্থ কচু হাসপাতালের যোগাযোগ করলে ভালো সুফল পাওয়া যাবে।

ঘর তৈরি ও আবাসস্থল ব্যবস্থাপনাঃ

গরু পালনের জন্য ঘর তৈরি ও আবাসস্থল ব্যবস্থাপনা আমাদের দেশে অধিকাংশ খামারী দুই থেকে তিনটি পশু মোটা তাজা করে থাকে যার জন্য সাধারণ আধুনিক সেট করার প্রয়োজন পড়ে না। ঘরের মাল-মাত্র ও অন্যান্য আবর্জনা যাতে সহজেই পরিষ্কার করা যায় সেদিকে খেয়াল রেখে ঘর তৈরি করতে হবে।

পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ

গরুর পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা জন্য গরু মোটা তাজা করনের দুই ধরনের খাদ্যের সমন্বয়ে রসদ বা রেশন তৈরি করা হয় যেমন:

  • আঁশ জাতীয়ঃ শুধু খড়, ইউ এম, সবুজ ঘাস ইত্যাদি। তবে এই প্রক্রিয়ায় খামারিদেরকে শুধু ঘরের পরিবর্তে ইউ এম এস খাওয়াতে হবে।
  • দানাদার খাবারঃ খৈল, ভুসি, চায় ের কুড়া, খোদ, শুটকি মাছ, ঝিনুকের গুঁড়া, লবণ ইত্যাদি।
  • খাওয়ানোর পরিমাণঃ গরুকে তার ইচ্ছে অনুযায়ী অর্থাৎ গরু যে পরিমাণ খেতে পারে সে পরিমাণ ইউ এম এস সরবরাহ করতে হবে। কোন খামারি সবুজ ঘাস খাওয়াতে চাইলে প্রতি একশ কেজি কাঁচা ঘাসের সাথে ৩ কেজি ছিটা গুড়ের মিশিয়ে তা গরুতে খাওয়াতে হবে। এক্ষেত্রে কাঁচা ঘাসেও গর্ভে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করতে হবে।
  • দানাদার মিশ্রনঃ খামারিদের সুবিধার জন্য নিচের সারণীতে একটি দানাদার মিশ্রণ তৈরীর বিভিন্ন উপাদান পরিমাণ সহ উল্লেখ করা হলো। নিম্নের ছক অনুযায়ী অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী খামারি গন বিভিন্ন পরিমাণ মিশ্রণ তৈরি করে নিতে পারবেন।
  • খাওয়ানোর পরিমাণঃ গরুকে তার দেহের ওজন অনুপাতে দানাদার খাদ্য সরবরাহ করে উত্তম পাশের দানাদার মিশ্রণটি গরুর ওজনের শতকরা ৮ থেকে ১ ভাগ পরিমান সরবরাহ করলেই চলবে।
  • খাওয়ানোর সময়ঃ দানাদার মিশ্রণটি এবারে না খাইয়ে ভাগে ভাগ করে সকালে এবং বিকালে খাওয়াতেই হবে।
  • পানি পান করানোঃ গরুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিষ্কার খাবার পানি সরবরাহ করতে হবে।

দৈহিক ওজন নির্ণয়ঃ

গরু মোটাতকরণ প্রক্রিয়া য় গরুকে দৈহিক ওজন নির্ণয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রদান করে থাকে। কেননা গরুর খাদ্য সরবরাহ ওষুধ সরবরাহ ইত্যাদি কাজগুলো করতে হয় দৈহিক ওজনের ভিত্তিতে। গরুর ওজন নির্ণয়ের জন্য গরুকে সমান্তরাল জায়গায় দাঁড় করাতে হবে এবং ছবির নির্দেশিকা মোতাবেক ফিতা দ্বারা দৈর্ঘ্য ও বুকে বেড়ের মাপ নিতে হবে। এম আর নিচে সূত্রে বসালে গরুর ওজন পাওয়া যাবে।যেমন: দৈর্ঘ্য *বুকের বেড়*বুকের বেড়=ওজন, কিলোগ্রাম=৬.৬০

শেষ কথাঃ উপরে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী গরু বা পশু পালন করলে ৯০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যেই গরু মোটাতকরণ করে বাজার করা সম্ভব।

সম্মানিত খামারি ভাই ও বোনেরা আমার এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন তাহলে অন্য একটি বিষয় নিয়ে আবার আপনাদের সামনে হাজির হতে পারব তো সে প্রত্যাশাই ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url